লেখাটিতে সরস্বতী পূজার উপকরণ, সরস্বতী পূজা মন্ত্র, সরস্বতী প্রণাম মন্ত্র, সরস্বতী পূজা পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্র, সরস্বতী বন্দনা মন্ত্র, সরস্বতী স্তোত্রম্, সরস্বতী প্রণাম মন্ত্র, সরস্বতী আরতি মন্ত্র রয়েছে।
এই লেখাটিতে যা যা থাকছে-
সরস্বতী পূজা মন্ত্র। সরস্বতী প্রণাম মন্ত্রঃ-
সরস্বতী পূজায় কি কি লাগে (পূজাবিধি)-
ফর্দমালা সিদ্ধি, সিন্দূর, তিল, হরীতকী, পঞ্চগুঁড়ি, পঞ্চশস্য, পঞ্চরত্ন, পঞ্চগব্য, পঞ্চপল্লব, যব-তিসিগাছ, পুরোহিত বরণ-১টি, ঘট-১টি, দ্বার ঘট- ২টি, কুন্ডহাঁড়ি-১টি, তেকাঠা-১টি, দর্পণ-১টি, তীরকাঠি-৪টি, সাদা সুতা, ঘটস্থাপন বরণডালা, সশীষডাব-৩টি, ঘটাচ্ছাদন গামছা, এক সরা আতপ চাউল, আসনাঙ্গুরীয়- ২টি, মধুপর্ক বাটি-২টি, মধু, দধি, আবির, দেবীর শাড়ি, ধূপ, প্রদীপ, বরণডালা-১টি, লক্ষ্মীর শাড়ি, চাঁদমালা, বিল্বপত্র মাল্য, শাঁখা-লোহা, রচনা, আম্রমুকুল, কুল, লেখনী-মস্যাধার, নৈবেদ্য- ২টি, কুচা নৈবেদ্য, থালা, ঘটি, ভোগের নৈবেদ্য, পুষ্পাদি, পান, পানের মশলা, বালি, কাষ্ঠ, খোড়কে, গব্যঘৃত, হোমের বিল্বপত্র-২৮টি, দক্ষিণা ।
নিষেধ – ব্রতীগণ পূজার পূর্বে কুল খাবেন না।
সরস্বতী পূজার নিয়ম-
মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে লক্ষ্মী-সরস্বতী, মস্যাধার ও লেখনী পূজা করিয়া প্রসাদ গ্রহণ করিবেন। পঞ্চমীর পূর্ব দিনে হবিষ্যান্ন ভোজন করিয়া পঞ্চমীর দিনে স্নানাদি সমাপন পূর্বক শুদ্ধ বস্ত্রে দেবী পূজার ব্রত করিবেন। পূজা অন্তে দেবীর চরণে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান পূর্বক প্রসাদ ও নির্মাল্য গ্রহণ করিয়া নিরামিষ আহার করিবেন।
পূজাপদ্ধতি – স্নানাদি সমাপন পূর্বক যথারীতি পূর্ব বা উত্তরাস্যে বসিয়া আচমন, বিষ্ণুবরণ পূর্বক কুশীতে আতপ চাউল লইয়া স্বস্তিবচন করিবেন। যথা- ওঁ কর্তব্যেহস্মিন্ গণপত্যাদি নানা দেবতা পূজা পূর্বকং লেখনী মস্যাধার সহিত শ্রী শ্রী সরস্বতী পূজা কর্মণি, ও পুণ্যাহং ভবন্তোহধি ক্রবস্তু। ওঁ পুণ্যাহং, ও পুণ্যাহং, ওঁ পুণ্যাহম্।। পুনরায় কর্তব্যেহস্মিন্ ইত্যাদি স্বস্তি ভবন্তোহধি ক্রবস্তু (তিনবার), ও স্বস্তি (তিনবার), পুনরায় কর্তব্যেহস্মিন্.. তারপর কুশীর আতপ চাউল ছড়াইতে ছড়াইতে, ঘন্টাধ্বনি সহকারে স্ববেদোক্ত স্বস্তি সূক্ত পাঠ করিবেন।
সরস্বতী পূজা মন্ত্রঃ-
পূজামন্ত্র- ওঁ শ্রীং লক্ষ্মীদেব্যৈ মনন।
অতঃপর গন্ধপুষ্প দ্বারা পূজা করিবেন। যথা- লেখনী- মস্যাধারেভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে এতে গন্ধপুষ্পে ও বীণা যন্ত্রায় নমঃ, এতে ও আবরণ দেবতাভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে চড়বেদেভ্যো নমঃ।
এতে গন্ধপুষ্পে পুস্তকাদিভ্যো নমঃ। এতে গন্ধপুষ্পে হংসায় নমঃ। ইত্যাদি ক্রমে পূজা পূর্বক সাধারণ বুশন্ডিকা নিয়মে স্থন্ডিল নির্মাণ পূর্বক হোম করিবেন। যথারীতি অগ্নিস্থাপন পূর্বক বিজপত্রের অর্চনা করিয়া- “ওঁ ঐং সরস্বত্যৈ স্বাহা” মন্ত্রে হোম করিবেন। যজ্ঞডুমুর সমিধ শেষে “ওঁ তদ্বিষো পরমং পদং সদা পশ্যন্তি দূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম স্বাহা” মন্ত্রে বিষ্ণুর হোম করিয়া, লিখনী মস্যাধারেভ্যো স্বাহা এইরূপে- নবগ্রহ, ইন্দ্রাদি দশ দিকপাল প্রভৃতির হোম করিয়া অগ্নির ধ্যান ও আহ্বান পূর্বক পূজা করিয়া বস্ত্রখন্ড, পান ও কদলী পূর্ণপাত্র উৎসর্গ পূর্বক অগ্নির বিসর্জন পূর্বক কশ্যপ (তিলক) গ্রহণ করিবেন। পরে পুষ্পাঞ্জলি দিবেন।
সরস্বতী পূজা পুষ্পাঞ্জলী মন্ত্রঃ-
পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র
(১)
যা কুন্দেদু তুষারহার ধবলা যা শ্বেত পদ্মাসনা। যা বীণা বরদন্ড মন্ডিত ভুজা যা শুভ্রবস্ত্রাবৃতা।। যা ব্রহ্মাচ্যুতশঙ্কর প্রভৃতিভির্দৈবৈ সদা বন্দিতা। সা মাং পাতু ভগবতী সরস্বতী নিঃশেষ জাড্যাপহা।। সা মে বসত্ব জিহ্বায়াং বীণাপুস্তক ধারিণী। মুরারী বল্লভাং দেবীং সর্বশুক্লা সরস্বতী।। সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল লোচনে। বিদ্যারূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমোহস্তুতে।।
(২)
জয় জয় দেবী! চরাচর সারে।
কুচযুগ শোভিত মুক্তাহারে।।
বীণা পুস্তক রঞ্জিত হস্তে।
ভগবতী ভারতী দেবী নমস্তে।।
সরস্বতী বন্দনা মন্ত্রঃ-
বন্দিলাম গণপতি বিঘ্ন বিনাশন।
বন্দিলাম লক্ষ্মী সহ দেব নারায়ণ।।
বন্দিলাম দুর্গাসহ দেব পঞ্চাননে।
আর বন্দি আদিত্যাদি নবগ্রহগণে।।
বন্দিলাম ভক্তিভরে দেবী সরস্বতী।
শ্রীগুরুর শ্রীচরণে করিনু প্রণতি।।
ভক্তিভাবে বন্দিলাম পিতা ও মাতারে।
ব্রাহ্মণ বৈষ্ণব বন্দি অতি ভক্তিভরে।।
প্রণাম করিয়া সর্ব দেব-দেবীগণে।
শ্রীপঞ্চমী ব্রতকথা পশুপতি ভণে।।
সরস্বতী স্তোত্রম্ঃ-
শ্বেত পদ্মাসনা দেবী শ্বেত পুষ্পোপশোভিতা
শ্বেতাম্বরা ধরা নিত্যা শ্বেত গন্ধানুলেপনা।।
শ্বেতাক্ষ সূত্র হস্তা চ শ্বেতচন্দন চর্চিতা।
শ্বেতবীণা ধরা শুভ্রা শ্বেতালঙ্কার ভূষিতা।।
বন্দিতা সিদ্ধগন্ধর্বৈরচিতা সুর-দানবৈঃ।
পূজিতা মুনিভিঃ সর্বৈঃ ঋষিভিঃ স্থয়তে সদা।।
স্তোত্রেনানেন ত্বাং দেবীং জগদ্ধাত্রী সরস্বতীম্।
যে স্মরন্তি ত্রিসন্ধ্যায়াং সর্বাং বিদ্যাং লভেন্তি তে।।
সরস্বতী প্রণাম মন্ত্রঃ-
সরস্বত্যৈ নমো নিত্যং ভদ্রকাল্যৈ নমো নমঃ
বেদ বেদাঙ্গ বেদান্ত বিদ্যাস্থানেভ্য এব চ।।
সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল লোচনে।
বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যাং দেহি নমোহস্তুতে।।
সরস্বতী আরতি মন্ত্রঃ-
জয় জয় বাণী মায়ের আরতি উজ্জ্বল।
ভক্তগণ সবে মিলি দেয় করতাল।।
শঙ্খ বাজে ঘন্টা বাজে বাজে করতাল।
মধুর মৃদঙ্গ বাজে শুনিতে রসাল।।
শ্বেতবসনা মাগো তুমি যে অনন্যা।
পরমা প্রকৃতি তুমি ত্রিভুবন মান্যা।।
মহানন্দে কেবা নাচে কেহ জয় দেয়।
কেহ বা আনন্দভরে চামর চুলায়।।
বসিয়া আছেন দেবী শ্বেত পদ্মাসনে।
করযোড়ে দাঁড়াইয়া যত ভক্তগণে।।
সুবাসিত ধূপ-দ্বীপ জ্বালায় ভক্তগণ।
পশুপতি করযোড়ে দেখে স্নিগ্ধ মন।।
🌐পড়ুনঃ- একটি বাস্তব জীবনের গল্প
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- ফেসবুক- মুক্তাক্ষর টেলিগ্রাম- মুক্তাক্ষর WhatsApp Group- মুক্তাক্ষর