তাজমহল সম্পর্কে অজানা তথ্য. পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি হল ভারতের তাজমহল। কিন্তু এই তাজমহল সম্পর্কে আমরা কতটুকুই বা জানি! আজ আপনাদের জানাবো তাজমহল সম্পর্কে এমন কিছু অজানা তথ্য যা আপনাকে বিস্মিত করবে।
যে সমস্ত আশ্চর্য বিষয় থাকছে লেখাটিতে-
তাজমহল সম্পর্কে অজানা তথ্য:-
শাহজাহান ও মমতাজের প্রথম দেখা?
একদিন শাহজাহান মিনা বাজারে ঘুরছিলেন তখন তার চোখ একটি মেয়ের উপরে পরে, সেই মেয়েটি সিল্ক এবং কাঁচের চুড়ি বিক্রি করছিল। জানেন কি সেই মেয়েটিই ছিল মমতাজ যার আসল নাম আরজুমান বানু বেগম। শাহজাহানের সাথে তার পরিচয় হওয়ার সময় শাহজাহানের বয়স ছিল ১৪ বছর অন্যদিকে মমতাজ এর বয়স ছিল ১৫ বছর।
সাত স্ত্রীর মধ্যে সবথেকে প্রিয়-
শাহজাহানের সাতজন স্ত্রীর মধ্যে থেকে তার সবচেয়ে প্রিয় স্ত্রী ছিলেন মমতাজ। সবসময় তিনি শাহজাহানের সাথে থাকতেন। ১৪ তম সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় মমতাজ মারা জান।
তাজমজল নির্মাণে করা হয়েছিল হাতির ব্যবহার-
কখনো মনে প্রশ্ন জেগেছে কি, তাজমহল তৈরির পাথর গুলি কে বয়ে নিয়ে এলো! তাজমহল তৈরি করতে যে পাথর গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল সেগুলি বয়ে নিয়ে আসতে ব্যবহার করা হয়েছিল ১০০০ টিরও বেশি হাতি।
যুদ্ধের সময় তাজমহলকে বাঁশের চাদরে মুড়ে রাখা হয়েছিল-
বিংশ শতকে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় গোটা তাজমহলকে শত্রু পক্ষের যুদ্ধ বিমান থেকে রক্ষা করতে সবুজ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল এতে ব্যবহৃত হয়েছিল প্রচুর সংখ্যক বাঁশ।
তাজমহল নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছিল কাঠ-
জানেন কি, তাজমহল শুধু পাথর দিয়েই নয় সাথে ব্যবহৃত হয়েছিল কাঠ। যদি যমুনা নদী না থাকত তাহলে হয়ত এতদিন তাজমহল ধ্বসে পরে যেত। কারন যমুনা নদীর জলীয় বাস্প কাঠ গুলিকে ভেজা রাখতে সাহায্য করে যার ফলে তাজমহলের স্ট্রাকচার মজবুত থাকে।
ভূমিকম্প থেকে বাঁচাতে নেওয়া হয়েছিল পদক্ষেপ-
যদি আপনি কখনো তাজমহল বেড়াতে যান তাহলে তাজমহলের মিনারত গুলির দিকে একটু মন দিয়ে লক্ষ্য করলে বুঝবেন সেগুলি বাইরের দিকে কিছুটা হেলে রয়েছে। জানেন কি এর পিছনে কি কারন ছিল!
আসলে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্পের সময় যদি মিনারত গুলি ভেঙে যায় সেগুলি কবরের উপর না পরে বাইরের দিকে যেন পরে যায় আর এতে কবর টির কোন ক্ষতি হবে না।
পড়ুনঃ- বাস্তবে ঘটে যাওয়া একটি ভয়ানক ভূতের ঘটনা
এখনের দিনে তাজমহল বানালে কত খরচ হতে পারে!-
শাহজাহান যখন তাজমহল বানিয়েছিলেন তখন তাজমহল বানাতে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় বত্রিশ মিলিয়ন রূপী লেগেছিল। সেই হিসেবে বর্তমানে তাজমহল বানাতে গেলে প্রায় ৮৮৫,৪৭,৩৭,৭৮১ রূপী খরচ হবে।
কালো তাজমহল তৈরির পরিকল্পনা চলছিল-
শ্বেত পাথরে তৈরি তাজমহলের ঠিক অপর পাশে অর্থাৎ যমুনা নদীর অপর দিকে একটি কালো পাথরের তাজমহল নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন শাহজাহান। সেই কালো মহল নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছিল কিন্তু আওরঙ্গজেবের হস্তক্ষেপে শাহজাহানের এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। এই কালো পাথরে তৈরি মহলে শাহজাহান নিজেকে সমাধিস্ত করতে চেয়েছিলেন।
উত্তরপ্রদেশে তৈরি হওয়ার কথা ছিল তাজমহল!-
জানেন কি আগ্রা তে নয় বরং উত্তর প্রদেশের বুরহানপুরে তাজমহল তৈরি করতে চেয়েছিলেন শাহজাহান। কারন এই স্থানেই মমতাজ মারা যান। কিন্তু এই স্থানে তাজমহল নির্মাণের জন্য উপযুক্ত মার্বেল পাথরের জগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না, যার কারনে শাহজাহান আগ্রাতে তাজমহল তৈরি করতে বাধ্য হন।
কবরে নেই কোন কারুকার্য-
তাজমহলের গায়ে নানান কারুকার্য থাকলেও যে রুমটিতে মমতাজ এবং শাহজাহানের কবর রাখা আছে সেখানে কোন কারুকার্য করা নেই। ইসলাম ধর্মানুসারে যে স্থানে কবর দেওয়া হবে সেখানে কোন কারুকার্য চলে না।
শুধু কি মমতাজ আর শাহজাহানের কবর আছে তাজমহলে!
জানলে অবাক হবেন যে, শুধুমাত্র মমতাজ এবং শাহজাহান নয় শাহজাহানের অন্যান্য স্ত্রীরা এবং বিশ্বস্ত চাকর দেরও সমাধি রয়েছে তাজমহলে। তবে এখানে বলে রাখা ভালো যে বাকিদের কবর গুলি তাজমহলের বাইরে থাকলেও পুরো তাজমহলের এরিয়ার মধ্যেই রয়েছে।
🌐 পড়ুনঃ- জীবনকে সুন্দর করবে এই সাইকোলজি টিপস গুলি
আমাদের সাথে যুক্ত হবেন যেভাবে- ফেসবুক- মুক্তাক্ষর টেলিগ্রাম- মুক্তাক্ষর WhatsApp Group- মুক্তাক্ষর
তাজমহলের অজানা রহস্য
FAQ-
তাজমহল নির্মাণ করতে কত বছর সময় লেগেছিল?
২২ বছর। নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৬৩২ সালের দিকে। সমাধিটি নিজেই ১৬৫৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল।
তাজমহল কোন নদীর তীরে অবস্থিত?
তাজমহল যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত।
তাজমহলের প্রধান স্থপতি কে ছিলেন?
তাজমহলের প্রধান স্থপতি ছিলেন, উস্তাদ আহমেদ লাহৌরি
তাজমহল তৈরি করতে কত শ্রমিক লেগেছিল?
তাজমহল নির্মাণ করতে ২০০০০ শ্রমিক লেগেছিল।
তাজমহলে কয়টি কক্ষ আছে?
১২০ টি কক্ষ রয়েছে।